- Blogtog
Patricia Narayan - Women Entrepreneur of the Year | ঋদ্ধিমান ভট্টাচার্য্য

“The secret of life, though, is to fall seven times and to get up eight times.”
সাফল্যের সব গল্পের এটাই বোধহয় প্রথম লাইন।সব ম্যানেজমেন্টের ক্লাসেই তাই যখন Motivation এর পাঠ দেওয়া হয় Paolo Coelho’র O Alquimista (The Alchemist) নভেলের সেই লাইনটাই যেন বার বার উচ্চারিত হয় - “And, when you want something, all the universe conspires in helping you to achieve it.” আর যারা সেই ষড়যন্ত্রে নিজেদের জারিত করতে পারেসান্তিয়াগোর মতন তারাই হয়ে উঠে Alchemist, যাদের স্পর্শে সব কিছুই চমকে ওঠে সোনার মতন।
ওয়েবসাইট ব্রাউজ করলে বা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনের পাতা উল্টালে এমন সব অনেক Entrepreneurs দের গল্প পাওয়া যায়, আজ যারা সবার কাছে দৃষ্টান্ত। এক টুকরো স্বপ্ন সম্বল করে যারা কেবল নিজেদের চেষ্টায় আজ শিখরে। আলিবাবা থেকে ফ্লিপকার্ট, মেক মাই ট্রিপ থেকে জোমাটো, ফেসবুক থেকে হটমেল এই হাই প্রোফাইল সাফল্য কীর্তির ভিড়ে কয়েকটি কম আলোচিত নাম আছে, যাদের উদ্যোগও মনে রাখার মতন।যেমন একজন হলেন পাট্রিসিয়া নারায়ণ।পাট্রিসিয়ার গল্প সিনেমার মতন। বাবা-মা দুজনেই ছিলেন সরকারি চাকুরে। অল্প বয়সে পাট্রিসিয়া প্রেমে পড়ল তের বছরের বড় উদ্যোগহীন, নেশায় চুর হয়ে থাকা এক জনের। ঘোর কাটল বিয়ের পর। বাবা মা কেউ আর সম্পর্ক রাখল না। আন্না নগরের ভাড়া বাড়িতে চলে এসে শুরু হল পাট্রিসিয়ার জীবনের বেঁচে থাকার লড়াই। অনেক চেষ্টা করেও লাভ হয় নি। দুটো সন্তান এসেছে। রাত হলেই ডক্টর জেকিলের মিস্টার হাইড হয়ে উঠার মতন পাট্রিসিয়ার স্বামী হয়ে উঠত অমানুষ। নেশার ঘোরে চলত মারধোর। দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হয়েছে সব, দিনের পর দিন।

রোজগার চাই। ঠেলা গাড়ি করে তাই পাট্রিসিয়া চলে এল মারিনা বিচ।দিনটা ছিল ১৯৮২ সালের ২১ শে জুন। সারাদিনে মাত্র এক কাপ কফি বিক্রি হল।সারা রাত কান্না পাচ্ছিল। কিন্তু পরের দিনটা ছিল অন্য দিন। সারাদিনে প্রায় ৮০০ টাকার বিকিকিনি হল। চা-কফি-সমশার ঠেলা গাড়িতে উঠতে থাকল আরও অনেক কিছু-কাটলেত, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, আইস ক্রিম, ফ্রুট জুস।সেই ১৯৮২ থেকে রোজ সকাল থেকে রাত অবধি, মারিনা বিচে ঠেলা গাড়ি নিয়ে হাজির থাকত পাট্রিসিয়া।
একদিন বিস্তর ঝামেলা হল স্বামীর সাথে। একটা বাসে উঠে পড়ল পাট্রিসিয়া, যে বাস টা তাকে পৌঁছে দিল National Port Management Training School পাট্রিসিয়া স্কুলের গেট পেরিয়ে হাজির হল প্রশাসনিক ভবনে। ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ক্যান্টিন চালানোর কাজ পেয়ে গেল পাট্রিসিয়া। শুরু হল নতুন অধ্যায়।১৯৯৮ তে পাট্রিসিয়া কে পার্টনার হয়ার জন্য আমন্ত্রন জানাল Sangeetha Restaurant group। ২০০৪ সালে পাট্রিসিয়ার জীবনে ঘটে গেল এক মারাত্মক দুর্ঘটনা। এক গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেলো একমাত্র মেয়ে আর জামাই। তবে সব শোক সামলে মা আর ছেলে ২০০৬ সালে শুরু করল তাদের রেস্তরাঁ।

আজ থেকে তিরিশ বছর আগে যে ঠেলা গাড়িতে করে মারিনার বিচে খাবার ফেরি করত, সেই পাট্রিসিয়া আজ সন্দীপা হোটেল চেনের (Sandeepha Chain of Restaurants) ডিরেক্টর। পাট্রিসিয়া কে আজ তাই সবাই চেনে FICCI Women Entrepreneur of the Year হিসেবে।