- Blogtog
ফুটবল আড্ডা দুর্গা পূজা বা প্রতিবাদ-দেখে নিন বাঙালির চেনার সহজ উপায়

ঋদ্ধিমান ভট্টাচার্য।
আমরা বাঙালী,কি করে বুঝবেন?
দুগ্গো পুজোর সময়। হামলে পড়ে পুজোর কেনাকাটা করি। নামি রেস্তোরাঁর বুফে লাঞ্চে ঝিঙে পোস্ত, লাউ চিংড়ি বা ভাপা ইলিশের জন্য আঁকুপাঁকু করি। বিসর্জনের আগে সিঁদুর খেলার সেলফি তুলি।
ব্যাস,এইটুকুই?
না,না আরো আছে। রক্তে প্রতিবাদের বুদ্বুদ ওঠে। আনটার্কটিকায় বরফ গললে আমরা পরিবেশ রক্ষার পোস্টার হাতে পথে নামি। সে প্যারিসই হোক বা হাইতি,রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে যেই বিপদে পরুক না আমরা বাঙালিরা তাদের পাশে আছি।
কিন্তু লোকে যে কাঁকড়া বলে?
সে তো রটনা। সত্যের অপ্রলাপ। পিছন থেকে টেনে ধরার পেছনে যে মহৎ উদ্দেশ্য আছে! বাঙালি ডারউইন মানে। স্ট্রাগল থেকেই তো যোগ্যতমের জন্ম হয় ,তাই তো দৈনিক ডালভাতের মতন ওই স্ট্রাগল মস্তিষ্কের পুষ্টির জন্য আবশ্যক।
আর কিসে আমরা বাঙালি ?
মুখেন মারিতং জগৎ। নস্টারজিয়ার বীরত্ব। সর্বঘটৈ অগাধ পান্ডিত্য।
আর রবি ঠাকুর?
সেতো বাঙালির কপিরাইট। সুরসুরি থেকে যৌনতা,বসন্ত উৎসব থেকে নবীনবরণ সবেতেই তিনি আছেন। তিনি কাকে হামি খেয়েছেন,কোথায় এসে ভাত খেয়েছেন সবই আমাদের। ওনার নোবেলও আমাদের নোবেল। আরে ওনিই তো বলেছিলেন,আমি তোমাদেরই লোক।
পড়ুনঃ প্রায় একশ বছর পুরনো কলকাতার কিছু বিখ্যাত খাবারের দোকান এখনো রমরমিয়ে চলছে
আর কাজকর্ম?
ও ব্যাপারে আমরা সৃজনশীল। কবিতা লিখি,গান গাই,ছবি বানাই। আমাদের সৃজনীতে জোয়ারভাটা নেই,এ নদী খরোস্রোতা। ওরিজিনালিটিতে খামতি পড়লেই,পুরো দাক্ষিণাত্য উপড়ে নিয়ে বাঙালি পোষাকে,খাপে খাপ।
আড্ডাটা এড়িয়ে যাচ্ছেন?
কি যে বলেন?সেই কি ভোলা যায়। রকে বসে, চায়ের দোকানে,কফি হাউস বা ক্যান্টিনে আড্ডা আমাদের পেটেন্ট। সে আড্ডা এখন আরো বৃহত্তর। স্যোশাল মিডিয়াতে,গ্রুপ চ্যাটে,শপিং মলে আড্ডা আমাদের আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধেছে।
লড়াই চাই?
আমরা আজও লড়ি। ইস্ট বেঙ্গল-মোহনবাগান নিয়ে লড়াই করি। লড়াই করে রসগোল্লার অধিকার ছিনিয়ে এনেছি।
বাঙালির নাকি পায়ের তলায় সর্ষে?
পড়ুনঃ ১৯১৩ সালে সমারসেটে ব্লাকার খুঁজে পেলেন হবহু আরেক মোনালিসা
সে বদঅভ্যাস অনেকেরই আছে বটে। সেই বিমল মুখুজ্জে কোনকালে সাইকেল চড়ে বিশ্বভ্রমণে গিয়েছিলেন। বুলাদি মানে বুলা সেন ইংলিস চ্যানেলে সাঁতার কেটেছেন। সে রোগ আজও আছে। আমার জ্যেঠু আজও পাহাড়ে চড়েন। ফেসবুকের এক বন্ধুনি ধেইধেই করে পাহাড়-জঙ্গল দাপিয়ে বেড়ায়। এক বন্ধু আবার বাইক চেপেই ভোঁ—লঙ ড্রাইভ। একজন তো আবার সুযোগ পেলেই তীর্থে যায়। আমারো একটু বাতিক আছে। বাঙালি বলেই না,এমন।
কিন্তু—
আর না,অনেক ইন্টারভিউ নিয়েছেন। এবার লাস্ট বাইট। আমি যেমন খুশী বলবো। আপনি নোট করুন। জানি ভাষা নিয়ে খোঁটা দেবেন। রোমান হরফে সহজপাঠ নিয়ে খিল্লি করবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন ওই ভাষাটি আমাদের সত্যিই খুব প্রিয়। ২১ শে ফেব্রুয়ারির আগে আগাম সাফাই না,যতই ফ্যাটফ্যাট করে ইংরেজি বলি না কেন,আদর-অভিমান-রাগ সবেতেই বাংলা আমাদের ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ। ফেলুমিত্তির বাঙালাতেই পড়ি।কাঠি থাক আর যাই থাক বাঙলা ভাষাটা আমরা ভালোবাসি।